সি এন টি কি ?

সি এন টি বার্সেলোনাতে ১৯১০ সালে প্রতিস্টা লাভ করে, এটা সামাজিক গনতান্ত্রিক দল বা ট্রেড ইউনিউনের মত নয়, এটা এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্টের মৌলনীতির উপর ভিত্তি করে এবং স্প্যানিশ রাষ্ট্রের চেতনা ও প্রথম আন্তর্কাতিকের আদর্শ অনুসরন করে কাজ করে থাকে।

Submitted by akmshihab on April 29, 2018

সি এন টি কি ?

বাংলায় ভাষান্তরঃ এ কে এম শিহাব

সি এন টি বার্সেলোনাতে ১৯১০ সালে প্রতিস্টা লাভ করে, এটা সামাজিক গনতান্ত্রিক দল বা ট্রেড ইউনিউনের মত নয়, এটা এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্টের মৌলনীতির উপর ভিত্তি করে এবং স্প্যানিশ রাষ্ট্রের চেতনা ও প্রথম আন্তর্কাতিকের আদর্শ অনুসরন করে কাজ করে থাকে।

সি এন টি এখনো স্পেনিশ রাষ্ট্রে সম্পূর্ন স্বাধীন ভাবে কোন প্রকার রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়া পরিচালিত হয়, যাতে কেবল মাত্র নিবন্দ্বিত কর্মজীবী মানুষের মতামতের উপর ভিত্তি করে সিদ্বান্ত গ্রহন করা হয়। সিন্ডিক্যালিজমের পেশাদার লোকদের মতামত গ্রহন বা সরকার অনুদান গ্রহন করা হয় না আর্থিক স্বকীয়তা বজায় রাখার জন্য এমন কি কোন প্রকার মধ্যস্থতা কারীর সাহায্য ও অনুমোদিত নয়।

ট্রেড ইউনিয়ন কি ?

ইহা হলো এমন একটি পরিষদ যা শ্রমিক শ্রেনীর আর্থিক ও সাংস্কৃতিক উভয় প্রকার জীবনমান উন্নয়নের জন্য কাজ করে। আপনি যদি শ্রমিক হন ( সিক্রিয়, বেকার বা অবসর প্রাপ্ত যাই হোন) এবং মনে করেন আপনি আপনার কর্ম জীবনে সত্যিকার প্রাপ্য পান নাই বা বঞ্চিত হয়েছেন। তা হলে আপনেকে স্বাগতম।

সি এন টি কি একটি শ্রেনীর ইউনিয়ন?

দি কনফেডারেশন নেচিঊন্যাল ডেল ট্র্যাবাজিও- হল কয়েকটি শ্রেনীয় ইউনিউনের কনফেডারেশন যা সকল ক্ষেত্রের ইউনিয়ন সমূহের জোট। এটা সকলের মুক্তির লড়াইয়ের একটি মঞ্চ। সকল শ্রমজীবী মানুষের মুক্তির মহাজোট।
সি এন টি র সাথে কারা যুক্ত ?

দল মত পথ ধর্ম ও বর্ন নির্বিশেষে সকল শ্রমজীবী মানুষই এর আওতাভুক্ত হতে পারেন। যিনি আমাদের সংস্থার আদর্শ উদ্দেশ্য গ্রহন করবেন এবং এসেম্বলীতে গৃহীত সিদ্বান্ত মেনে সদস্য হতে পারেন।

এটা একটি স্বাধীন সংগঠন তা আপামর শ্রমিকদেরকে ঐক্যবদ্ব করতে পারে। ইহার স্বাধীনতা ও স্বকীয়তা বহাল রাখার জন্য কোন ভাবেই কোন রাজনৈতিক দল বা ব্যাক্তি বা ধর্মীয় দল বা ব্যাক্তি নিজেদের প্রচার মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করতে পারবেন না ।

যারা বড় ব্যবসায়ী, ভূস্বামী, বিশাল অর্থ সম্পদের মালিক, কোন কোম্পানীর নির্বাহী ক্ষমতার অধীকারী ব্যাক্তি, সরকারী কর্ম কর্তা, পুলিশ, বা নিপীড়ন কারী সংস্থার লোক সি এন টির সদস্য হতে পারবেন না । এছাড়া ও যারা অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের সাথে যুক্ত তাদেরকে নেয়া হবে না ।

সি এন টি কি অন্যান্য ট্রেড ইউনিয়নের মতই একটি সংগঠন ?

সি এন টি একটি ব্যাতিক্রমী সংগঠন । আমরা বিশ্বাস করি সরাসরি গণতান্ত্রিক পদ্বতীতে। এই ধরনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সংশ্লিস্ট সকলকে সিদ্বান্ত গ্রহন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হয়। আমাদের সংবিধি মতে সকল সিদ্বান্ত গ্রহন করা হবে এসেম্বিলর মাধ্যমে। এসেম্বলিতে সকলের বক্তব্যকেই সমান গুরুত্ব প্রদান করা হয়। যদি আপনি নিজে ভিন্ন কিছু ভালো মনে করেন তবে আপনি আপনার মত করে চলতে পারেন। সি এন টি এমন একটি সংগঠন যার সুদির্ঘ কালের অভিজ্ঞতা আছে, ফলে সকলের মতামতের উপর ভিত্তিকরে সকল বিষয়ে সিদ্বান্ত গ্রহন করতে অভ্যস্থ, সকল অবস্থায় মানুষের স্বাধীনতা ও ন্যায্যতায় হস্তক্ষেপ করতে চায় না । অভিজ্ঞতা বিনিময় ও পারস্পরিক মতামতের প্রতি সকল সময় ই শ্রদ্বাশীল । সি এন টির নামে কোন ব্যাক্তি অর্থ সংগ্রহ করতে পারেন না । এখানে আমরা সকলেই সমান।

১৯১০ সালে ৮ ঘণ্টা কাজের দাবিতে, শনিবার ছুটি, ছুটির দিনের বেতন প্রাপ্তি, স্বাস্থ্য বীমা, কর্মে অবসর, ধর্ম ঘটের অধিকার ইত্যাদির দাবীতে সি এন টির জন্ম হয়। পরবর্তীতে এর মাঝে কিছু উন্নততর বিষয় যুক্ত হয় যেমন- স্কুল প্রতিস্টা, লাইব্রেরী এবং পত্রিকার দাবী ও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এটা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্বে লড়াই করে, ১৯৩৬ সালে সামাজিক পরিবর্তনে যুক্ত হয় এবং যৌথ খামার প্রতিস্টায় ও ভূমিকা রেখে উনবিংশ শতাব্দীতে ইউরূপের ইতিহাসে উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা পালন করেছে ।

সি এন টি’র মৌলিক নীতিমালা কি কি ?

বিপ্লবী সিন্ডিক্যালিজমের জন্য নিম্ন লিখিত নীতিমালা অনুসরন করা হয়ঃ

ক) আত্মনিয়ন্ত্রণের নীতিঃ আমরা মনে করি যে সিদ্বান্ত সমূহের কারনে যারা প্রভাবিত হন তাঁরা অংশ গ্রহনেই কোন বিষয়ে সিদ্বান্ত নেয়া উচিৎ। যারা আপনার জন্য কাজ করেন না তাঁদের কোন অধিকার নেই আপনার বিষয়ে সিদ্বন্ত নেবার। সি এন টি হলো সেই রকম একটি সিন্ডিক্যাটঃ যাতে একক কোন সিদ্বান্তই গ্রহন করা হবে না, সকলের অংশ গ্রহনে সকল সিদ্বান্ত গ্রহন করা হবে।

খ) ফেডারালিজমের নীতিঃ প্রতিটি সি এন টি সিন্ডিক্যাট স্বাধীনতার অধিকারী থাকবে। তাঁরা তাঁদের ইচ্ছেমত কর্মসূচি প্রনয়ন ও বাস্তবায়ন করতে পারবে। যে কোন ধরনের পরিস্থিতি নিজেরাই মোকাবেলা করবে।

গ) সংহতি ও সম্মিলিত সহায়তার নীতিঃ প্রতিটি সি এন টি সম্মিলিত ভাবে পরস্পরের সাথে কনফেডারেশন গঠন করবে, যদি কোন আগ্রাসী ঘটনা ঘটে তবে সম্মিলিত ভাবে তার মোকাবিলা করা হবে। প্রত্যেকেই সমভাবে একে অন্যের সহায়ক হয়ে উঠবে।

প্রলেতারিয়েত আন্তর্জাতিকতাবাদঃ

একজন কর্মী/শ্রমিক স্থানীয় সিন্ডিক্যাটে যোগদানের মাধ্যমে ফেডারেশনে এবং যথাক্রমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংস্থার সদস্য হয়ে উঠেন। এবং প্রথম আন্তর্জাতিক ও এনার্কো-সিন্ডিক্যালিজমের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। কেননা আমরা আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একে অন্যের উপর নির্ভরশীল । সকল প্রকার বিরুধী চক্রের মোকাবিলা করতে হলে আমাদের সকল স্থরেই ঐক্য জরুরী বিষয়।

সি এন টির রনকৌশলঃ ডাইরেক্ট একশনঃ

সি এন টির কার্যক্রম করতে গিয়ে যত সমস্যা আসবে প্রত্যেকে নিজেরাই তার সমাধান করবেন কোন প্রকার মাধ্যম বা অন্যদের সহায়তা নিবে না । আমরা মনে করি এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে গিয়ে আমরা অনেক কিছুই শিখতে পারব। আমাদের ব্যাক্তিগত দায়িত্ব জ্ঞান ও বৃদ্বি পাবে। এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্টদের সিদ্বান্ত গ্রহনে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। অনেক সময় সিদ্বান্ত গ্রহন জটিল হয়ে পড়েঃ চলতে গিয়ে সমস্যা তো মোকাবিলা করতে হবে। যদি আপনি কিছু করার জন্য মনস্ত করেন তখন দেখবেন প্রকৃতিগত ভাবেই কিছু শত্রু আপনার সামনে এসে হাজির হবে, যারা আপনার কাজে নানা ভাবে বাধার সৃষ্টি করবে। কাজ করতে যাবেন দেখবেন তাঁরা আপনাকে কম টাকায় বেশী কাজ করাতে চাইবে। আর আপনি চাইবেন তাঁদের বিপরীত। তখনই আপনার ও তাঁদের পরিকল্পনায় শুরু হবে দ্বন্দ্ব।

সি এন টির দর্শন হলোঃ এনার্কিজম

প্রতিটি এসেম্বলি এনার্কিস্ট ভাব ধারায় প্রভাবিত থাকবে। এনার্কিজম হলো একটি রাজনৈতিক দর্শন যা সমাজকে এমন ভাবে গড়ে তুলতে চায় যেখানে কোন প্রকার জবর দস্তি বা সহিংসতা থাকবে না । আমরা সকল প্রকারের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অস্বীকার করি যারা অন্যদের নামে নিজেদের সিদ্বান্ত চাপিয়ে দেয়। প্রতিটি ব্যাক্তি ই সিদ্বান্ত গ্রহনে সম্পূর্ন সার্বভৌম। এই ধারনা সকল সংগঠনে প্রয়োগের মাধ্যমে সকল প্রকার পদসোপান নির্মূল করা দরকার। নিজস্ব ব্যবস্থাপনা, অংশীদারিত্ব ও বিকেন্দ্রীকরনের জন্য বিকল্প ভাবনার সৃষ্টি করতে হবে ।

আমরা সমাজের একটি আমূল পরিবর্তন করতে, শ্রম দাসত্বের অবসান ঘটিয়ে সামাজিক বিপ্লব সাধন করতে চাই । চূড়ান্ত লক্ষ্য হবে উদার সাম্যবাদি সমাজে সামগ্রীক স্বাধিনতা ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা । আমরা মনে করি সামাজিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য সামাজিক ঐক্য তৈরী করা দরকার, সকলে আসলে ও বেশীর ভাগ লোককে এই পথে আনতে হবে। সকল কিছু পরিকল্পনা মাফিক হতে হবে এমন কথা নেই। তবে তা যৌক্তিক হতেই হবে। আমরা একটি মুক্ত সমাজ চাই। আমরা যেমন সমাজ চাই ঠিক তেমন ভাবে সংঠনকে ও গড়ে নিতে হবে । কেননা পুরাতন সমাজের ভেতরই নতুন সমাজের জন্ম হয়।

আমাদেরকে মনে রাখতে হবে রাষ্ট্রের প্রতিটি আগ্রসনের যেন উপযক্ত জবাব দেয়া যায়। আমাদের প্রতি অন্যায় করলে ও তাঁদের মত আমরা আচরন করবনা। সকল প্রকার বস ও প্রতিস্টানের সাথে আত্মরক্ষা মূলক লড়াই চলবে। আর সেই জন্যই আমরা সি এন টি হলাম এনার্কো সিন্ডিক্যালিস্ট বা স্বাধীন শ্রমিক আন্দোলন।

শ্রমিক বিপ্লবী আন্দোলনের মাধ্যমে সামগ্রীক সমাজের মুক্তি সংগ্রাম শক্তিশালী হবে- যা প্রচলিত সমাজে বিলয় ঘটাবে, সমাজ থেকে কর্তৃত্ববাদ, পদসোপান, নিপিড়ন, ও সহিংসতার অবসান ঘটাবে।

সি এন টি কিভাবে একটি কোম্পানীতে কাজ করবে ?

ট্রেড ইউনিয়নের মধ্যমে, যাতে থাকবে অনুমোদিত শ্রমিকগন যারা একটি চমৎকার সি এন টি র কোম্পানী তৈরি করবে। যদি দেখা যায় এমন কোন কোম্পানী যাতে শ্রমিকগন নিপিড়নের শিকার তবে আমাদের কাজ হবে গোপনে। আর যদি কোম্পানী টি প্রচলিত আইন মেনে চলে তবে আমাদের কাজ ও হবে নিয়ন্ত্রিত এবং প্রকাশ্য।

সি এন টির সকল সিদ্বান্ত হবে এসেম্বলীর মাধ্যমে । সেই এসেম্বলীতে ঠিক করা হবে সকল কমরেডদের পক্ষে কে প্রতিনিধিত্ব করবেন। একজন মুখপাত্র কেবল সিন্ডিক্যালদের বক্তব্য পেশ করবেন । অন্য কিছু নয়।
সিন্ডিক্যাটু ডি র্যা মু (ইউনিয়ন শাখা) এবং সিন্ডিক্যাটু ডি অফিসিও ভেরিওস ( বিভিন্ন প্রকার ট্রেড ইউনিয়ন) সি এন টির বিভিন্ন শাখায় যেমন- শিল্প কারখানা, নির্মান শ্রমিক, হোটেল শ্রমিক ও ব্যবসায়ী কর্মীর সংখ্যায় কম হলে। অন্যান্য শাখা থেকে মুল ট্রেড ইউনিয়নে সমাবেশ করে কাজ পরিচালনা করা যেতে পারে।

ইউনিয়ন কি ভাবে কাজ করবে ?

নিবন্দ্বিত লোকদের এসেম্বলীর মাধ্যমে কাজ চলবে। সময়ে সময়ে এসেম্বলী ডাকা হবে, এসেম্বলীতে প্রয়োজনীয় বিষয়ে আলোচনা করে চুক্তি সম্পাদিত হবে। দুটি এসেম্বলীর মাঝখানে সিদ্বান্ত গ্রহনের সুযোগ নেই। কমিটি ছাড়া কোন নির্বাহী ক্ষমতা থাকবে না ।

ইউনিয়ন কমিটি কি ?

সিন্ডিক্যাটের এসেম্বলীতে প্রতিনিধিত্বশীল লোক মনোনয়ন দেয়া হবে, যারা অন্যান্য সিন্ডিক্যাটের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করবেন, মতামত আদান প্রদান করবেন, তহবীল গঠন করবেন। মূলত তারা এসেম্বলীর সিদ্বান্ত মোতাবেক কার্য সম্পাদন করবেন। তাদেরকে নিয়েই সিন্ডিক্যাল ইউনিয়ন গঠিত হবে। সি এন টি এই সকল ক্ষেত্রে কিছু সিমাবদ্বতা আছে, এই ধরনের কমিটি নেতা হয়ে বসতে পারে।

সি এন টি কমিটির সিমাবদ্বতা সমূহঃ

১- ইউনিয়নের সদস্যগন তাঁদের অতিরিক্ত কাজের জন্য বা সংগ্রামী ভূমিকার জন্য কোন ভাতা পান না ।

২- প্রতিটি কমিটি তাঁদের ব্যবস্থাপনার জন্য স্ব স্ব ক্ষেত্রে চুক্তি সম্পাদন করবেন, তাঁরা কেবল এসেম্বলীয় সিদ্বান্ত বাস্তবায়ন বা সিন্ডিক্যাটের অনুরুধ পালন করবেন। কোন জরুরী কাজের জন্য ও তাঁরা এসেম্বলির নিকট দায়ী থাকবেন, কাজের সঠিকতা ও বেঠিকতা ঠিক করবে এসেম্বলী।

৩- সকল পদ পদবী যেকোন সময়েই প্রত্যাহার যোগ্য। এসেম্বলী কাকে কোন পদে রাখবে বা প্রত্যাহার করবে তার বিষয়ে সিদ্বান্ত গ্রহনে সম্পূর্ন স্বাধীন থাকবে। যদি ঠিক ও হয় তবে পদের অদল বদল করতে পারবে।

৪- কমিটি সিন্ডিক্যাট এসেম্বলীতে কোন প্রস্তাব পাঠাতে পারবেন না ।

৫- সকল কমিটিই এসেম্বলীর মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে আসতে হবে। এসেম্বলী সকল পদ পদবির নিয়ন্ত্রন করবে।

৬- কোন রাজনৈতিক দলের লোক সি এন টির পদ গ্রহন করতে পারবেন না ।

৭- প্রতিটি কমিটির কাজের বর্ননা ও ব্যাখ্যা দিবে এসেম্বলী।

৮- সি এন টির কমিটির নিজস্ব কোন মতামত দেবার ক্ষমতা নেই। তাঁরা যখন যে বিষয়ে কথা বলবেন বা চুক্তি করবেন তা সংগঠন সমূহের চুক্তির ভিত্তিতেই হবে। সি এন টির কর্মকৌশল হবে প্রশাসনিক ধরনের, তা কোন ভাবেই ক্ষমতা নির্ভর নয়। বা কর্তৃত্ব পরায়ন নয়।

দ্বান্দ্বিক পরিস্থতিতে শ্রমিকগন কি কি অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবেনঃ

কোম্পানীর সুনাম নষ্ট করার জন্য গন মানুষের সংহতি, সমাবেশ, পোস্টার, পুস্তিকা, পত্র পত্রিকায় লিখা ইত্যাদি পদ্বতী অনুসরন করা যাবে।

বয়কট করার পদ্বতী হলো- ভোক্তাদেরকে উক্ত কোম্পানীর পন্য গ্রহনে নিরুৎসাহিত করা।

সাবোটাজ যা হলো কোম্পানীর পন্য উৎপাদনে বাঁধা প্রদানের ব্যবস্থা করা। সাংস্কৃতিক ভাবে ও তা করা যায়। যেমন- নাটক, গান, কবিতা ইত্যাদির মাধ্যমে কোম্পানীর বিরুদ্বে জনমত গড়ে তুলা।

আমাদের ইউনিয়নের কার্যক্রমঃ

আমরা আমাদের কাজে যে সকল সাফল্য অর্জন করেছি তা অনেক আইনজীবী ও ইউনিয়ন সমূহ হাজার হাজার ইউরো খরচ করে ও অর্জন করতে পানেন নাই। এটা সম্ভব হয়েছে কেবল মাত্র আমাদের দাবীর কারনে, আমরা আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইনি, বরং ন্যায্যতা দ্বারা পরিচালিত হয়েছি। যখনই কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে, সি এন টি সন্তোষ জনক পরিস্থিতি তৈরী না হওয়া পর্যন্ত থামে নাই। আমাদের নীতি হলো শক্তি অর্জন না করে আন্দোলনে যাই না, আবার যতক্ষন শক্তি আছে ততক্ষন থামি না। আন্দোলন পরিচালনায় আমরা ও বড় বাজেট নিয়েই নামি। একটি অর্থনীতিতে ঝুঁকির মধ্যে, অনিশ্চিত খাতে, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ সংস্থায়, বহুজাতিক সংস্থায়, সরকারি অফিসে, আমাদের ইউনিয়ন কর্ম তার দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। এস্টলিরোস, ফারোভিওল, সিলেস, এভিয়াস, কোডাইক্স এবং অন্যান্য শত শত কোম্পানি নিজেদের শ্রমিক ও সহযোগী শ্রমিকদের চাপে দাবীর কাছে সায় দিতে বাধ্য করেছে।

সি এন টির কাঠামোঃ

এটা ইউনিয়ন দিয়ে যাত্রা শুরু এবং নানা জাতীয় ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে গড়ে উঠে। এরা সকলেই এসেম্বীলর মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এই সংগঠন গুলো সারাসরি কাজের মাধ্যমে চলে, কোন প্রকার তৃতীয় পক্ষের সহায়তা গ্রহন করে না । পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে লক্ষ্য অর্জনের জন্য দাবী মালার সিঁড়ি বেয়ে সামাজিক পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যায়। ইউনিয়ন কাঠামো সিন্ডিক্যাটের মত নয়, কোম্পানী কমিটির মত নির্বাচনের মাধ্যমে সিন্ডিক্যাট কমিটি ঠিক করা হয়।

তিন টি নাঃ

সি এন টি নির্বাচনকে ‘না’ বলে। উদারনীতির প্রতি ‘না’ । ভর্তুকিতে ‘না’। আমরা কোম্পানির বেতন ভুক্ত লোক চাই না। আমরা মধ্যস্থতাকারি চাই না। আমাদের যে পরিমান সম্পদ আছে তার চেয়ে বেশী চাই না, যারা আমাদের নিকট ইচ্ছেকৃত ভাবে আসে তাদেরকে ও আমরা যাচাই করে নিতে চাই।
আমরা কি ধরনের বিশ্ব চাই ?

আমরা প্রায়স পরিবর্তনের কথা বলি বা চিন্তা করি – কিন্তু আসলে আমরা কি চাই ? অন্যরা যা চায় আমরা ও কি তাই চাইঃ শান্তি; স্বাধীনতা; আমাদের শ্রমের ফলাফল, আমরা জানি অনেকেই কাজ না করে ও আমাদের চেয়ে ভালো খায়, ভালো ভাবে থাকে, আর তা তাঁরা করতে পারে যারা কাজ করে তাঁদের ফল ছিনিয়ে নিয়ে। তাঁরা ভাল চিকিৎসা পায়, তাঁদের সন্তানেরা ভালো স্কুলে পড়ে। সমাজে তাঁদের ক্ষমতা ও বেশী।

আর সেই জন্য আপনি পরিবর্তন চাইছেন। দান দক্ষিনার কোন মূল্য নেই । দান দক্ষিনার কাজ হাজার বছর চললে ও ন্যায় বিচার প্রতিস্টার কোন সম্ভাবনা নেই। কারন একটি শয়তানী চক্র চার পাশ ঘিরে রেখেছে। নানা কৌশলে সম্পদ হস্তগত করে ব্যাংকার, ব্যবসায়ী এবং রাষ্ট্রের হাতে জমা হচ্ছে। আমরা সহিংসতা, নিপিড়ন, ও রাষ্ট্র মুক্ত সমাজ চাই।

আমরা কারা ?

আমরা কেহই বোকা নই, আমরা যা - তাই চাইছি, তাঁরা আমাদের নিকট যা চায় তা আমরা চাই না । আসলে আমরা হলামঃ মজুর, অবসর প্রাপ্ত শ্রমিক, গৃহিনী, বেকার, ছাত্র, প্রবাসী ইত্যাদি। আমরা সকল আদর্শের চাই সত্য হলো নারী ও পুরুষ, জাতি ধর্ম, বর্ন, পেশা, বয়স সকলেই এক । আমারে মুখের আকৃতি যাই হোক আমরা শ্রমিক উপার্জন কারী মানুষ। আমরা সংগঠিত শ্রমিক শ্রেনী।আমাদের নিকট অতি মূল্যবান যে সম্পদ আছে তা হলো মর্যাদা ও স্বাধীনতা । আমদের কোন ভয় নেই। আমরা দুনিয়ার বদল চাই।

আমরা সি এন টিঃ

একটি এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্ট ইউনিয়ন, যেখানে সমতার ভিত্তিতে সকল শ্রমিক এক হয়, খেটে খাওয়া মানুষ ও সমাজের উপর যে আগ্রাসন হয় তা আমরা প্রতিরোধ করি; আমরা আমাদের দ্বারা পরিচালিত হই, কোন নির্বাহী কমিটি নেই, নেতা ও নেই, আমরা ই আমাদের সমস্যার উপর ভিত্তিকরে সামর্থানুসারে সিদ্বান্ত গ্রহন করে কাজ করে যাই।

Comments

Related content