লড়াকো এনার্কিস্ট বা নিরাজবাদি

বর্তমান সময়ে খুব কম সংখ্যক লোক আছেন যারা নিজেদেরকে এনার্কিস্ট বলে পরিচয় দেন, হয়ত কোন কোন এলাকায় দু’ একজন করে আছেন তাঁরা শক্ত ভাবেই আছেন, কেবল তরুন বয়সের বিপ্লবী বর্ননা দিয়ে তৃপ্তি নেবার জন্য নয়। একজন নিরাজবাদি এই পরিস্থিতিতে ও এনার্কিজমের মৌল নীতির ভিত্তির উপর নির্ভর করে নিজের লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে তাঁরা অন্যান্য আন্দোলনে ও অংশ নিচ্ছেন। যেমন- সামরিক আইন বিরুধী আন্দোলন, সাম্রাজ্যবাদ বিরুধী আন্দোলন, জাতিয়তাবাদ বিরুধী আন্দোলন, বা শ্রেনী সংগ্রামের নানা বিষয় নিয়ে স্ব স্ব সংগঠন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন সারা দুনিয়াময়।

Submitted by akmshihab on April 15, 2018

লড়াকো এনার্কিস্ট বা নিরাজবাদি

এ কে এম শিহাব

এটা সকলেই জানেন যে একজন এনার্কিস্ট বা নিরাজবাদি একাই লড়াই করার জন্য প্রস্তুত থাকেন, বিরুপ পরিবেশে ও নিজের ধারনা ব্যাক্ত করতে পিছিয়ে থাকেন না। অতীতে ও নিরাজবাদিগন লড়াই সংগ্রামের এমন বহু উদাহরন রেখেছেন, এমন কি অনেক সময় কেবল একটি মাত্র দেশে ও তাঁরা লড়াই সংগ্রাম করেছেন।

বর্তমান সময়ে খুব কম সংখ্যক লোক আছেন যারা নিজেদেরকে এনার্কিস্ট বলে পরিচয় দেন, হয়ত কোন কোন এলাকায় দু’ একজন করে আছেন তাঁরা শক্ত ভাবেই আছেন, কেবল তরুন বয়সের বিপ্লবী বর্ননা দিয়ে তৃপ্তি নেবার জন্য নয়। একজন নিরাজবাদি এই পরিস্থিতিতে ও এনার্কিজমের মৌল নীতির ভিত্তির উপর নির্ভর করে নিজের লড়াইটা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে তাঁরা অন্যান্য আন্দোলনে ও অংশ নিচ্ছেন। যেমন- সামরিক আইন বিরুধী আন্দোলন, সাম্রাজ্যবাদ বিরুধী আন্দোলন, জাতিয়তাবাদ বিরুধী আন্দোলন, বা শ্রেনী সংগ্রামের নানা বিষয় নিয়ে স্ব স্ব সংগঠন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন সারা দুনিয়াময়।

নিরাজবাদিরা মনে করেন না যে, কেবল পেশাগত কারনেই মানুষের আচরনিক পরিবর্তন হয়ে থাকে; কারো বিচার বিবেচনায় যখনই কোন আন্দোলন সংগ্রামকে সঠিক মনে হবে তখনি তিনি এতে যোগ দিবেন । সংগঠন অনেক সময় মানুষকে সংস্কারবাদি বা কর্তৃত্ববাদি বানিয়ে দেয়; কিছু লোকেরা অর্থ ও ক্ষমতার জন্য নষ্ট হয়ে যায়। যারা নষ্ট হয়ে যায় তাঁরা কোন ভাবেই আর এনার্কিস্ট থাকেন না, আমরা ও বলি দয়া করে আর নিজেদেরকে নিরাজবাদি বা এনার্কিস্ট পরিচয় দিয়েন না । নিজেই নিজের পথ ধরুন!

যদি সত্যি এ শব্দটি ‘সম্মানি’ হয়ে থাকে তবে আমরা অবশ্যই আরো একজন নতুন মুক্তিপরায়ন বিপ্লবী পাব। যারা আমাদের আদর্শ আরো সুন্দর ও ভালোভাবে প্রচার প্রাসার করতে পারবেন। এর কোন প্রকার অপব্যবহার করবেন না । প্রতিটি সংগঠনেই কিছু ব্যাক্তি গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে থাকেন, তা আবার নানা দেশে নানা প্রকল্প হতে পারে। কেউ কেউ বলেন এনার্কিজম নানা ধরনের আছে। সিন্ডিকেটবাদ, কমিউনিজম, ব্যক্তিত্ত্ববাদ, শান্তিচুক্তি, ইত্যাদি প্রায় একেই ধরনের নানা নামে পরিচিত। কিন্তু আসলে বিষয়টি তা নয় ।

কেহ যদি ব্যাক্তিগত স্বার্থে ঝগড়ায় লিপ্ত হয় বা শান্ত ও সংস্কার মূলক কাজ করতে চায় তবে তাদেরকে এক ছাতার নিজে রাখতে পারেন না । আসল সত্যিটি হল এনার্কিবাদেরর কোন প্রকার রকম ফের নেই। এটা একই রকম কেবলই এনার্কিজম বা নিরাজবাদ। আর কিছু নয়। ক্রপোতকিনের দোহাই দিয়ে অনেকেই এনার্কিস্ট কমিউনিজমের কথা বলেন, তাঁরা বুঝাতে চান সরকার বিহিন সমাজতন্ত্রের কথা, যা প্রায় নিরাজবাদি সমাজের মতই ।

আরো একটি ধারনা আছে যাকে বলা হয়, এনার্কিস্ট কালেক্টিভিজম। এটা স্পেনের এনার্কিস্টগন ব্যবহার করতেন সেটাও অনেকটা সেই উপর্যুক্ত ধারনার মতই। যদি উপর থেকে কোন নিয়ম বিধি চাপিয়ে দেয়, ভবিষ্যতের জন্য অর্থৈতিক পরিকল্পনা তৈরীকরে না দেয়, সাম্যবাদ এবং যৌথতাবাদ যদি নিচ থেকে উপরের দিকে নিয়ন্ত্রিত হয়, তবে তার সাথে নিরাজবাদের বা সিন্ডিক্যালিজমের তেমন কোন পার্থক্য নেই। এই পথ ও পন্থা গুলো লক্ষ্যে পৌছার জন্য এক নিরন্তর সংগ্রামের নাম । সাম্যবাদকে নিরাজবাদ অর্থেই ব্যবহার করা যায়, যা গড়ে উঠে সমাজকে কেন্দ্রকরে। যৌথতাবাদ হল একটি সাম্যবাদি সমাজের আর্থিক ইউনিট।

কমিউন গুলি যদি ছোট না হয় – যা সাধারণত গ্রামের আকারের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠে- তবে সুবিধার জন্য তাঁকে নানা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্রে ইউনিটে ভাগ করা হয়, যৌথ প্রক্রিয়ায় ও সকলের মিলিতভাবে এবং অংশ গ্রহনে সকল কর্ম সম্পাদন প্রতিনিধি নির্বাচন করা হয়। অন্যথায় এটি নিছক শিল্প গণতন্ত্র হবে। যদি মুক্ত সাম্যবাদের স্বপ্ন হয় আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য তবে সিন্ডিক্যালিজম হবে আমাদের লড়াই সংগ্রামের পথ ও পন্থা । এটা হোল শিল্প কারখানার শ্রমিকদের একটি ইউনিয়ন যা আমাদেরকে মুক্ত সাম্যবাদে উপনিত করতে সহায়তা করবে।

রাষ্ট্র ভিত্তিক সাম্যবাদ কোন ভাবেই মুক্ত সাম্যবাদের বিকল্প হতে পারে না । বরং তা হলো সম্পূর্ন উল্টো জিনিষ। এটা হলো পুঁজিবাদী সমাজের দল,রাষ্ট্র এবং রাজনৈতিক শ্রেনীর বিকল্প ব্যবস্থা । সাম্যবাদ যদি নিরাজবাদের আলোকে আলোকিত না হয় তবে হয়ে উঠে মারাত্মক কতৃত্ববাদি ও ভয়ঙ্কর এক ব্যবস্থা। সিন্ডিক্যালিজম আদতেই একটি বিপ্লবী মতবাদ। এর প্রধান কাজই হলো শ্রমিকগন কর্ম ক্ষেত্রে নিজেদের প্রভাব বলয় প্রতিস্টা করবেন। এটার উদারতাবাদি হবার দরকার হয় না । এটা পরস্পর মিলেমিশে রাজনৈতিক চর্চার ভেতর দিয়েই বিকশিত হয়। ফলে সকল ক্ষেত্রেই একটা নিয়ন্ত্রন তাঁদের প্রতিস্টিত হয়। আমরা সেই জন্যই আদর্শিক বিষয়ে ঝুকি নিতে চাইঃ এনার্কো-সিন্ডিক্যালিজম আমাদের আদর্শ। যেখানে শ্রমিকগন উৎপাদন নিয়ন্ত্রন করবে, নিচের দিক থেকে নিয়ন্ত্রন বজায় রাখা হবে, উপরে কোন প্রকার সরকার থাকবে না ।

Comments

Related content