আমরা যখন এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্ট পদ্বতীর কথা চিন্তা করি তখন বলতে পারি যে সত্যিকার সামাজিক পরিবর্তন বা বিপ্লব কেবল অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমেই আসতে পারে। এটা ঠিক, ব্যাক্তিগত উদ্যোগ বা ভূমিকার কারনে উদারতাবাদের বিকাশে কিছু কাজ করতে পারে। ব্যাক্তিগত উদ্যোগ বলতে বুঝায়, কিছু ব্যাক্তি যারা একেই মানসিকতা সম্পন্ন তাঁরা পৃথক কোন স্থানে একটি কমিউন স্থাপন করে দুনিয়ার অন্যান্য কর্মকান্ডকে উপেক্ষা করে নিজেদের ইচ্ছেমত জীবন যাপন করেন। কারো ধার ধারেন না।

একটি কর্তৃত্ববাদি সমাজে একজন নিরাজবাদির ভূমিকা
এ কে এম শিহাব
মহান চিন্তক থরো বলেন, “ একটি দাসত্বপূর্ন সমাজে একজন স্বাধীন মানুষের উত্তম স্থান হল কারাগার”, (তিনি সেখানে কেবল রাত কাটান)। এটা এক ধরনের দিনে দিনে প্রগাঢ় হয় এমন একটি প্রতিজ্ঞা, আসল কথা হল, ইহা সত্যিকারের বসবাসের জায়গা নয়। একজন বিপ্লবীকে সদা সর্বদা নিপিড়ন ও বিচারের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়, একজন দুঃখবাদিই এমন বিষয়ে আস্থা রাখতে পারেন। এই ধরনের কার্যক্রম সাধারণত ব্যাক্তিগত স্তরেই থেকে যায়, তা কত দুর পর্যন্ত বিপ্লবী ভূমিকা রাখবে তা নিশ্চিত ভাবে বলা মুশকিলঃ এটা এমন ধরনের কাজ যা নিয়ে আগে থেকে অনুমান করা ও সম্ভব হয় না। এনার্কিস্ট বা নিরাজবাদিরা এই ধরনের কাজের জন্য উস্তাদ, এরা সামাজিক বা নানারকমের বিপ্লবী কাজে যুগান্তকারী ভূমিকা রেখে আসছেন। যেমন – উদারতাবাদি শিক্ষা, শ্রমিক আন্দোলন, যৌথ বা ব্যাক্তিগত ভাবে সরাসরি কর্মে ঝাঁপিয়ে পড়া ইত্যাদি।
আমরা যখন এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্ট পদ্বতীর কথা চিন্তা করি তখন বলতে পারি যে সত্যিকার সামাজিক পরিবর্তন বা বিপ্লব কেবল অর্থনৈতিক পরিবর্তনের মাধ্যমেই আসতে পারে। এটা ঠিক, ব্যাক্তিগত উদ্যোগ বা ভূমিকার কারনে উদারতাবাদের বিকাশে কিছু কাজ করতে পারে। ব্যাক্তিগত উদ্যোগ বলতে বুঝায়, কিছু ব্যাক্তি যারা একেই মানসিকতা সম্পন্ন তাঁরা পৃথক কোন স্থানে একটি কমিউন স্থাপন করে দুনিয়ার অন্যান্য কর্মকান্ডকে উপেক্ষা করে নিজেদের ইচ্ছেমত জীবন যাপন করেন। কারো ধার ধারেন না। যারা এই কমিউন কায়েম করবেন তাঁরা এক সময় মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বসবাস করতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মোখীন হয়েছিলেন – এই ক্ষেত্রে হয়ত তা তাঁরা অতিক্রম করতে পারছেন। কিন্তু এই ধরনের প্রকল্প সামাজিক বিপ্লবে তেমন ভূমিকা রাখবে বলে মনে হয় না । আসলে একক ব্যাক্তির ভূমিকায় কোন ব্যাপক সামাজিক পরিবর্তন হয় না। সমগ্র জাতি যদি স্বৈরাচারের অধীনে থাকে আর একের পর এক জন করে ব্যাক্তি যদি নিজেদেরকে বলি দিতে থাকে, যখন সকল ব্যাক্তি ঐক্যবদ্ব হয়ে হাইড্রার মাথা কেটে না নিবে বা স্বৈরাচারকে হত্যা না করবে ততক্ষন পর্যন্ত নয়া সমাজের বিকাশ অসম্ভব। সাধারন মানুষকে ঐক্যবদ্ব না করে মাত্র কয়েকজন ব্যাক্তি সাহস ও দক্ষতা দেখালে স্বৈরাচার নানা অজুহাত খাড়া করে গনহত্যা চালাতে পারে। সেই ক্ষেত্রে এমন একটি অবস্থার সৃষ্টি করতে হবে যে মানুষ গ্যাসচেম্বারে প্রবেশের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে যাবে (এটা আক্ষরিক অর্থেই বলছি)। আমরা এটা মনে করি না যে, “ শ্রমিক শ্রেনীর লোকেরা ভূল করতে পারেন না”; হ্যাঁ, ভূল হতেই পারে। কিন্তু সংগঠন হল শক্তি ! আমরা সকল সময়েই গন আন্দোলন ও গন সংগ্রামের কথা বলি কেননা শ্রমিক শ্রেনীর হাতে রয়েছে বিশাল শক্তি। প্রলেতারিয়েত চাইলেই পুরাতন অর্থনীতি ভেঙ্গে নয়া ব্যবস্থা কায়েম করতে পারেন। শ্রমজীবী মানুষের হাত ধরেই দুনিয়ায় নয়া মুক্ত সমাজের কায়েম হতে পারে, এরা ই সকল কর্মের নিয়ন্ত্রন ভার হাতে নিতে পারেন এবং কর্তৃত্ববাদি ব্যবস্থাপনার বিলয় ঘটাতে পারেন।এখন তাঁরা ই সকল শ্রম শক্তিকে সংঘবদ্ব করতে সক্ষম।
Comments