বিপ্লবী সামাজিক আন্দোলন

একটি নৈরাজ্যিক সমাজকে রাষ্ট্র ও পুঁজিবাদের সাথে তুলনা করা যায় কেমন করে? একটি উঁচু নিচু স্তর বিশিষ্ট সমাজ কিছু বিষেশ বৈশিস্ট ধারন করে থাকে। এই ধরনের সমাজ তাঁদের প্রতিবেশীদেরকে গিলে খায়, তাঁদের প্রশাসক চক্র নানা সুবিধা আদায় করে থাকে । পক্ষান্তরে, এই সকল সমাজে জলবায়ুর পরিবর্তন, খাদ্য সঙ্কট, পানির সঙ্কট, বাজারের অস্বাভাবিক উঠা নামা, সামাজিক-আর্থিক বৈষম্য ও অস্থিরতা নিত্য সংগী হয়ে থাকে । এই গ্রন্থে আমি দেখাতে চেষ্টা করব একটি নৈরাজ্যবাদি সমাজ কিভাবে ঠেকসই পদ্বতীতে তাঁর সকল লোকদের সকল চাহিদা পুরন করে থাকে ।

Submitted by akmshihab on April 9, 2018

বিপ্লবী সামাজিক আন্দোলন

এ কে এম শিহাব

নৈরাজ্যবাদ একটি শক্তিশালী বিপ্লবী সামাজিক আন্দোলন যা পুঁজিবাদের বিরুদ্বে লড়াই সংগ্রাম করতে গিয়ে উদ্ভোত হয়েছে- এর লক্ষ্য হলো সকল প্রকার শোষণ ও শাসন থেকে বিশ্ব মানব সমাজকে মুক্ত করা । এটা কোন কঠিন বিষয় নয় বরং খুবই সরল ও স্বাভাবিক একটি পথ ও পন্থাঃ জনগন জানেন কোন প্রকার বিষেশজ্ঞ ছাড়াই কিভাবে তাঁদের জীবন যাপন করতে পারবেন। অন্যান্য আত্মসমর্পিত লোকেরা বলে বেড়ায় যে মানুষ তাঁর নিজের প্রকৃত স্বার্থ বুজতে পারে না। তাঁদের সুরক্ষার জন্য একটি সরকার দরকার। একটি রাজনৈতিক দলের উপস্থিতিই সমাজের সকল স্তরের মানুষের সকল স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারে। নৈরাজ্যবাদিরা দৃঢ় ভাবে বলে কোন প্রকার এক কেন্দ্রীক সরকারের পক্ষে সকল মানুষের জন্য সিদ্বান্ত গ্রহন সঠিক হতেই পারে না, তা অবশ্যই বিকেন্দ্রিক করতে হবেঃ তাই বলা হয় প্রতিটি ব্যাক্তিই সমাজের কেন্দ্র হয়া উচিৎ, সকলেরই স্বাধীন ভাবে পরস্পরের সাথে মিশে সম্পর্কের বুনন তৈরী করার মাধ্যমে নিজেদের সকল সমস্যার সমাধান করার পরিবেশ বজায় থাকা চাই।

রাষ্ট্র পরিচালিত স্কুল কলেজ বিশ্বব্দ্যালয়ে আমরা যে শিক্ষা গ্রহন করি তাতে এই শিক্ষাই দেয়া হয় যে আমরা আমাদেরকে রাষ্ট্র ছাড়া পরিচালনা করতে পারব না । তারা শেখায় নৈরাজ্য হল অবাস্তব বিষয় কল্পনা বিলাশ মাত্রঃ এটা কোন কাজের মতবাদ নয়। পক্ষান্তরে, আমাদের অভিজ্ঞতা বলে ইহা রাষ্ট্রের ছেয়ে আরো অনেক চমৎকার ভাবে স্মাজ পরিচালনায় সক্ষম । দুনিয়ার ইতিহাস বলে লক্ষ লক্ষ বছর পৃথিবীর নানা জায়গায় মানুষ রাষ্ট্র ছাড়াই সুন্দর, নিরাপদ ও শান্তির জীবনযাপন করেছে।

একটি নৈরাজ্যিক সমাজকে রাষ্ট্র ও পুঁজিবাদের সাথে তুলনা করা যায় কেমন করে? একটি উঁচু নিচু স্তর বিশিষ্ট সমাজ কিছু বিষেশ বৈশিস্ট ধারন করে থাকে। এই ধরনের সমাজ তাঁদের প্রতিবেশীদেরকে গিলে খায়, তাঁদের প্রশাসক চক্র নানা সুবিধা আদায় করে থাকে । পক্ষান্তরে, এই সকল সমাজে জলবায়ুর পরিবর্তন, খাদ্য সঙ্কট, পানির সঙ্কট, বাজারের অস্বাভাবিক উঠা নামা, সামাজিক-আর্থিক বৈষম্য ও অস্থিরতা নিত্য সংগী হয়ে থাকে । এই গ্রন্থে আমি দেখাতে চেষ্টা করব একটি নৈরাজ্যবাদি সমাজ কিভাবে ঠেকসই পদ্বতীতে তাঁর সকল লোকদের সকল চাহিদা পুরন করে থাকে ।

আমরা বর্তমান ও অতীত থেকে নানা তথ্য উপাত্য সংগ্রহ করে পাঠকের সামনে হাজির করে দেখাব কিভাবে নৈরাজ্যব্যবস্থাকে চাপা দেয়া হয়েছে নানা সময়ে এবং তা থেকে কিভাবে বিপ্লবী সিদ্বান্তে উপনিত হওয়া যায়। আমরা খুব সহজেই কোন প্রকার কতৃর্ত্ব, প্রভূ, রাজনীতিবিদ, বা আমলা ছাড়া সমাজে বসবাস করতে পারি; এটা হবে বিচারক, পুলিশ, এবং অপরাধী, ধনী ও গরীব বিহীন; এই নৈরাজ্যিক সমাজে লিংগগত বৈষম্য, দাসত্ব, গনহত্যা বা কোন প্রকার উপনিবেশবাদের অস্থিত্ব থাকবে না । আমাদের এই লক্ষ্যিত সমাজে কোন প্রকার কারাগার থাকবে না । থাকবে না কোন প্রকার বন্দ্বিত্ব।

অবশ্যই আমরা বাস্তব অবস্থায় নৈরাজ্যবাদি সমাজ বিনির্মানে কোন অভিজ্ঞতাকে খাট করে দেখবনা। আমরা যদি একবার স্বধীনতার ভিত্তিতে সমাজ পরিচালনার সুযোগ পেয়ে যাই তবে এতে অনেক সৃজনশীল পন্থার সংযোজন ঘটানো হবে। সমাজকে সত্যিকার অর্থেই স্বধীনভাবে স্থাপন করা হবে। তাই আসুন সেই নয়া যুগের সুচনা করি। সকল বাঁধা অতিক্রম করে সুন্দর সমাজ আজকের ও আগামী প্রজন্মের জন্য বিনির্মান করি।

Comments

Related content