এনার্ক-সিন্ডক্যালিজম হল কর্মজীবী- শ্রমজীবীদের আন্দোলন। ক্ষুদ্র একটি শিক্ষানবিশ দল থেকে একটি বৃহৎ বিপ্লবী দল ও এর আওতায় পড়ে, উদারনৈতিক সংগঠন সমূহ তৃনমূল থেকে নিয়ন্ত্রন ও প্রভাবিত হতে গড়ে উঠছে।
এনার্কো-সিন্ডিক্যালিজম কি ?
এ কে এম শিহাব
এনার্কিজম বা নিরাজ সমাজ হল একটি রাজনৈতিক মতাদর্শ যা ঘোষনা করেছে “ সমাজতন্ত্র ছাড়া স্বাধীকার হল অন্যায় এবং অবিচার আবার স্বাধীনতা বিহীন সমাজতন্ত্র হল দাসত্ব ও নিস্টুরতা”।
সিন্ডিক্যালিজম হলো একটি শ্রমজীবীদের আন্দোলন। এই শব্দটির উদ্ভব হয়েছে ফ্রান্সের ইউনিয়নিজম(সিন্ডিক্যালিজল) থেকে। ইহা শ্রমিকদেরকে একতাবদ্ব করে তাঁদের স্বার্থের জন্য লড়াই করতে ভূমিকা রাখে।
এনার্ক-সিন্ডক্যালিজম হল কর্মজীবী- শ্রমজীবীদের আন্দোলন। ক্ষুদ্র একটি শিক্ষানবিশ দল থেকে একটি বৃহৎ বিপ্লবী দল ও এর আওতায় পড়ে, উদারনৈতিক সংগঠন সমূহ তৃনমূল থেকে নিয়ন্ত্রন প্রভাবিত হতে গড়ে উঠছে।
এনার্কো- সিন্ডিক্যালিস্ট অন্যান্য বিপ্লবী সংগঠন সমূহের সাথে ও কাজ করতে চায়। প্রথমিকভাবে স্থানীয় পর্যায়ে ছোট ছোট দল ও শিল্প কর্মীদের সাথে নেট ওর্য়াক গড়তে চায়, তৃনমূল থেকে ক্রমে নানা কাজের ভেতর দিয়ে সরাসরি বা ডাইকেক্ট একশনের মাধ্যমে ধর্মঘট ও দখল করার স্তরে উন্নিত হতে চায়।
এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্টদের নীতি হল কাউকে রিক্রিট করা নয়, বরং ব্যাক্তিগত মত বিনিময়, সাধারন সভার মাধ্যমে বক্তব্য তুলে ধরে নিজেদের অবস্থান সকলের সামনে পরিস্কার করা, যাতে আগ্রহী ব্যাক্তিগন নিজেই এসে অংশ নিতে পারেনে। সেই সভায় সংহতির নীতি মালা তুলে ধরেন, ডাইরেক্ট একশন ও স্ব সংগঠিত হবার আহবান জানায়।
এই দিক থেকে বিচার করলে এটা পরিস্কার হয় যে এনার্কো – সিন্ডিক্যালিস্ট ও ইউনিয়নিজম কোন ভাবেই এক প্রকৃতির নয়। আমাদের লক্ষ্য হলো অর্থনৈতিক স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়া আর তথাকথিত শ্রমিক পার্টি গুলো রাজনৈতিক স্বার্থে কাজ করে থাকেন। এনার্কো-সিন্ডিক্যালিজম রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উভয় বৈষম্যের বিরুদ্বে স্ব সংগঠিত হয়ে থাকে।
মোট কথা হলো আমরা নিজেরা দল বদ্ব হয়ে, পরস্পরের নিকট থেকে কাজের ভেতর দিয়ে শিখি, আমরা আমাদের ক্ষমতা ব্যবহার করি নিজেরাই আমাদের কোন অফিসার, রাজনৈতিক নেতা বা ভ্যানগার্ডের দরকার নেই। এই প্রক্রিয়াকে আমরা বলতে পারি সেটা হলো সেই মডেল যে মডেল অনুযায়ী আমরা আগামী দুনিয়া বানাতে চাই। যেখানে কোণ বস, রাজা থাকবে নাঃ সত্যিকার স্বাধীন সাম্যবাদ।
এনার্কো-সিন্ডিক্যালিজমের আসল মুলনীতিই হলো কর্ম ক্ষেত্রে নিজেদের মাঝে গভীর সম্পর্কের বুনন তৈরী করা, শ্রমিকগন যেন নিজেরাই দল বদ্ব হয় বা ঐক্য গড়ে তুলে ভেতরে ও বাহিরে। যে ঐক্য আমাদেরকে সরকার, আমলা, বস ও হুজুরদের বিরুদ্বে লড়াই করতে নিজেদের স্বার্থে বিজয়ী হতে সাহায্য করবে। আমরা চূড়ান্ত ভাবে সরকার, রাষ্ট্র, শ্রেনী বিহিন সমাজ বা নিরাজ সমাজ গড়ে তুলতে চাই। যেখানে মানুষ ‘সামর্থমত কাজ করবে, আর চাহিদা মত পাবে’- কর্ম ক্ষেত্রের সকল প্রতিনিধিত্ব হবে সকলের মতের ভিত্তিতে আর তা অবশ্যই রিকল যোগ্য। আর এটাই হল সত্যিকার স্বাধীন সাম্যবাদ।
আমরা শ্রেনী সংগ্রামের ভেতর দিয়ে এমন একটি সমাজ বিনির্মান করতে চাই। আমাদের কাজের লক্ষ্যই হল শ্রেনী সংগ্রাম তরান্বিত করতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রচার মূলক, সহযোগিতা মূলক, ও উন্নয়ন মূলক কাজ করে যাওয়া। এই ধরনের কাজ আমাদের স্বপ্নের সমাজ গড়তে এবং সকলকে ঐক্যবদ্ব হতে সহায়তা করবে। আমরা নিম্নের নীতিমালা অনুসরন করে কাজে ব্যপৃত হয়েছিঃ
সংহতিঃ ‘একতাই বল’ একজন ব্যাক্তি তুলনা মূলক ভাবে ক্ষমতাহীন। বস, আমলা, রাষ্ট্র, বা কোন নেতার সামনে এককভাবে তেমন কিছু করা যায় না। কিন্তু সকলে একতাবদ্ব হয়ে কাজ করলে গনেশ উল্টে যাবে । ঘুরে যাবে টেবিল সহজেই।
ডাইরেক্ট একশনঃ আমরা আমাদের কাজের জন্য আমাদের পক্ষে কাজ করে দেবার জন্য কোন রাজনৈতিক দল বা নেতাকে ডাকব না, আমারা যা চাই তা আমারাই করব।
স্ব সংগঠনঃ আমরা সাধারন সভার মাধ্যমে লড়াই সংগ্রামের নিয়ন্ত্রন করা হবে, আমরা একে অন্যের নিকট থেকে শিখব, আমরা চেষ্টা করব যেন কেহ বিক্রি না হয়ে যায় বা কাজকে স্থবির করে ফেলে।
এনার্কো –সিন্ডিক্যালিস্ট কি কি করে থাকে?
এনার্কো-সিন্ডিক্যালিস্টগন কর্ম ক্ষেত্র ও সামাজিক ভাবে নানা রকমের কাজ কর্মে নিয়োজিত আছে, এর মধ্যে কিছু দির্ঘ মেয়াদি আবার কিছু কাজ আছে স্বল্প মেয়াদি ধরনেরঃ
কর্ম ক্ষেত্রে সংগঠিত হওয়াঃ কাজের মজুরী ও কর্ম পরিবেশ বিষয়ক।
সামাজিক সংগঠনঃ জনগণের জন্য গৃহ ও পরিবেশ বিষয়ক।
ধর্মঘট এবং দখলে সংহতি প্রকাশঃ পিকেটিং, অর্থ সাহায্য এবং অন্যান্য সহায়তা দান।
শ্রমিকদের জন্য সহায়তাঃ পিকেটিং, ধর্মঘট, মিছিল করতে গিয়ে সমস্যায় পড়লে সাহায্য করা।
নেট ওয়ার্কিং করাঃ একেই উদ্দেশ্যে কর্মে নিয়োজিত দল, গ্রুপ ও ব্যাক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা।
জনসভার আয়োজন করাঃ দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, যুদ্ব, বায়ুমন্ডলের পরিবর্তন এবং রাজনীতি যা শ্রমিকদেরকে আক্রান্ত করে । সেই সকল বিষয় মানুষের সামনে তুলে ধরা।
প্রচার প্রপাগান্ডা চালানোঃ নিয়মিত ভাবে লিফলেট, নিউজ লেটার, ম্যাগাজিন প্রকাশ করা। সংহতি, ডাইরেক্ট একশন, ও স্ব সংগঠনের ধারনা সকলের সামনে প্রচার করা ।
Comments