টেক্সেশন ও অভিবাসন প্রসঙ্গ

ব্রেন্ডেন বিহান মন্তব্য করেছেন, “ ডাবলিনের দরিদ্র পরিবার সমূহের জন্য গিনেস পরিবার ব্যাপক অনুদান দিয়ে অনেক উপকার করেছে”। অথচ নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে সেই অঞ্চলের দরিদ্র জনগণ গিনেস পরিবারের জন্য যা করেছে সেই তুলনায় তাঁদের অবদান একেবারেই নগণ্য”। টেক্সের ক্ষেত্রে আরো বলা হয় যাদের অর্থ আছে তাঁদের নিকট থেকে নিয়ে যাদের নেই তাদেরকে দেয়া হচ্ছে।

Submitted by akmshihab on April 22, 2018

টেক্সেশন ও অভিবাসন প্রসঙ্গ

এ কে এম শিহাব

যারা শ্রম ও মেধা খাঁটিয়ে উৎপাদন ও প্যাটেন্ট তৈরী করে তাঁদের উপর সরকার কর বা টেক্সট বসায় এই অজুহাতে যে সরকারী সিস্টেম নাকি এই সকল ক্ষেত্রে বিশাল অবদান রাখছে। বাস্তবতা হলে এই ক্ষেত্রের তাঁদের কোনই অবদান নেই । এই রকমের আরো একটি ভূয়া ধারনা চালু আছে যে, দেশের বড় লোকেরা গরীবদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করে আর দান দক্ষিনা করে এক মহান কর্মে লিপ্ত আছেন। ব্রেন্ডেন বিহান মন্তব্য করেছেন, “ ডাবলিনের দরিদ্র পরিবার সমূহের জন্য গিনেস পরিবার ব্যাপক অনুদান দিয়ে অনেক উপকার করেছে”। অথচ নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে সেই অঞ্চলের দরিদ্র জনগণ গিনেস পরিবারের জন্য যা করেছে সেই তুলনায় তাঁদের অবদান একেবারেই নগণ্য”। টেক্সের ক্ষেত্রে আরো বলা হয় যাদের অর্থ আছে তাঁদের নিকট থেকে নিয়ে যাদের নেই তাদেরকে দেয়া হচ্ছে। কোন প্রকার সুযোগ সুবিধা পাবার আগেই লোকদের নিকট থেকে কর আদায় করে নেয়া হচ্ছে। ধনিক শ্রেনীর লোকেরা তাঁদের চৌকস উপদেষ্টাদের মাধ্যমে নিজেদের আখের গুছিয়ে নেন। আমরা সকলেই জানি কেবল টাকা কোন প্রকার সম্পদ উৎপাদন করে না। তাঁর জন্য দরকার হয় পেশি শক্তি, মেধা, ও প্রাকৃতিক সম্পদের। মানবিক শক্তি সামর্থকে যথাযথ ভাবে কাজে লাগানোর জন্য অর্থ ব্যবহার করা হয়। অর্থ ছাপানো যায়, ঋনের ব্যবস্থা করা যায় সেই অর্থ ব্যবহার করে শোষন করা ও যায়। ধনিক শ্রেনী যখন মন্দ্বা সৃষ্টি করতে চায় এরা তখন অর্থ ও ঋনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়। বাজার থেকে অর্থ তুলে নেয়। মন্দ্বা কিন্তু কোন ভাবেই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়। যেমন- দুর্ভিক্ষ, খরা, বন্যা, বা ভুমিকম্প ইত্যাদির মত নয়। এটা মানব সৃষ্ট। নিরাজবাদি সমাজে কোন প্রকার মন্দ্বার সম্ভাবনাই থাকবে না ।

অভিবাসনের প্রভাব

যারা মোটা অংকের বিনিয়োগ করেন তাঁরা মোটা অংকের মুনাফা ও গুনতে চান। আর এই উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য এরা হয় পন্যের মান কমিয়ে খরচ কমাতে চায়, নয়ত মজুরী কমিয়ে দিতে চায়। তাঁরা সাধারণত দ্বিতীয় পন্থাই বেশী পছন্দ করেন। কিন্তু যদি শ্রমিক শ্রেনী বেশী সংগঠিত ও ঐক্যব্দ হয় এবং প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়, তখন পুঁজিপতিদের নিকট আরো দুটি পথ খোলা থাকে। যেমন- ১। কারখানাকে সেই জায়গায় স্থানান্তর করা যেখানে সস্তা শ্রমিক পাওয়া যায় এবং ২। শ্রমিকদেরকে কারখানায় নিয়ে আসা । প্রথম পন্থার ক্ষেত্রে পরিবেশ দুষন একিটি বড় সমস্যা হিসাবে দেখা দেয়। তবে পুঁজিপতিরা এর তেমন কোন গুরত্বই দেন না । তাঁরা সেই সকল ক্ষেত্রে দুনিয়ার যে সকল দেশে রাজনৈতিক অবস্থা দূর্বল সেই সকল দেশেই বেশী যান । সেই সকল দেশে গমনাগমন সহজ এবং সস্তায় শ্রমিক কাজে লাগানো ও সহজতর। তাই অভিবাসনকে উৎসাহিত করা হয়। কিন্তু দেশ প্রেমিক রাজনৈতিক নেতারা অভিবাসনের বিরুধিতা করেন। এই সুযোগে শ্রমিকদের বিরদ্বে শ্রমিক শ্রেনীকে লাগিয়ে দেবার চেষ্টা করা হয়। সেই জন্য কখনো ধর্ম বা কখনো জাতিগত বিষ ছড়িয়ে দেয়া হয়। যে বিষ দির্ঘ কাল কোন সমাজে বা দেশে হিংসা বিদ্বেশের কারন হতে পারে। যা অনেক ক্ষেত্রে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন প্রক্রিয়াকে পর্যন্ত প্রভাবিত করে দিতে সক্ষম হয় । শ্রম জীবী মানুষের মাঝে যখন হিংসার আগুন জ্বলে, মারা মারি, কাটা কাটি করতে থাকে তখন পুঁজিপতি শ্রেনীর লোকেরা নিশ্চিন্ত জীবন যাপন করতে পারেন । তখন শ্রমিকগন নিজেদের মজুরী বৃদ্বি, ভালো কর্ম পরিবেশ, বা অন্যান্য সুযোগ সুবিধার কথা বলার সময় পায় না । পারস্পরিক হিংসা বিদ্বেষের পাশাপাশি নিজেদের চাকুরী হারানোর ভয় তাঁদের তাড়া করে বেড়ায়। ফলে সামগীক ভাবে পুঁজিবাদী চক্র নিরাপদ জীবন যাপন করতে পারেন, আর রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা ও তাঁদের জন্য সহজতর হয় ।

Comments

Related content